• শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন

সালিসে কিশোরীকে পছন্দ হওয়ায় বিয়ে করলেন চেয়ারম্যান

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৮৪ বার পঠিত
আপডেট টাইম : শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১

২৬ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

পটুয়াখালীর বাউফলে এক যুবক ও কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সালিস বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান (৬০) নিজেই ওই কিশোরীকে (১৪) বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (২৫ জুন) বিকেলে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

জানা গেছে, কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়নপাশা গ্রামের বাসিন্দা মো. রমজান (২৫) একই ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি মেয়েটির বাবা। তিনি বিষয়টি কনকদিয়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে জানান। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে ওই যুবক ও কিশোরীর বিয়ে দেওয়ার কথা বলে কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে সালিস বৈঠকের আয়োজন করেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টায় দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান।

সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। মেয়ের বাবা এতে রাজি হলে বিকেলেই কাজি ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মেয়েটিকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বিয়ের কাবিন নামায় মেয়েটির জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে দেওয়া জন্মনিবন্ধন ও পিএসসি পাসের সনদ অনুযায়ী মেয়েটির জন্মতারিখ ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। তবে বাড়িতে তার প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন না।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রথম স্ত্রী আছে। সেই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে প্রেমিক মো. রমজান আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে অচেতন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মো. ফিরোজ আলম।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মো. রমজান বলেন, ওকে (প্রেমিকা) আমার কাছে এনে দেন। আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না। চেয়ারম্যান আমাদের দুটি জীবন নষ্ট করেছে।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, আপনাদের ভাবিকে দেখে আমার পছন্দ হয়েছে। এছাড়াও আমার বিয়ে করার দরকার ছিলো। তিনি (দ্বিতীয় স্ত্রী) তিন বছর আগে পড়াশোনা ছেড়েছেন। বিয়ে হওয়াতে আমরা আনন্দিত।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

সালিসে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মনির বলেন, আমি নতুন মানুষ। চেয়ারম্যান বিয়ে করেছেন, সেখানে আমি কী বলব?

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ছেলেটির খোঁজ নেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০