• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা: আসামির স্বীকারোক্তি

ডেস্ক রিপোর্ট / ২৪০ বার পঠিত
আপডেট টাইম : রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১

১১ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের পর হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া মামলার আসামি সুমন চন্দ্র দাস (৩৩) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আটক সুমন দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার বড় পাহাড়পুর শাহাপাড়ার জগদীশ চন্দ্র দাশের ছেলে।

রোববার (১১ জুলাই) দিনাজপুর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আশরাফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত শনিবার সন্ধ্যায় এই মামলা একমাত্র আসামি সুমন চন্দ্র দাস দিনাজপুর আমলী আদালত-৩ এর বিচারক শারমিন আক্তারের সামনে স্কুলছাত্রীকে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যার ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন ।

তিনি আরো বলেন, এই ঘটনার পর থেকেই ডিবি পুলিশ অপরাধের ধরন দেখে ৪৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কিন্তু কোন কুল কিনারা পাচ্ছে না । একপর্যায়ে নিহত স্কুল ছাত্রী জাকিয়ার দাদির কাছে জানতে পারেন পাশের গ্রামের বড় পাহাড়পুর শাহাপাড়ার জগদীশ চন্দ্র দাশের ছেলে সুমন চন্দ্র দাস প্রায়ই স্কুল জাকিয়াকে উত্যক্ত করত । সেই কথার সূত্র আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সুমন চন্দ্র দাসকে গত ৬ জুলাই রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ আটক করে। পরের দিন আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় । দিনাজপুর আমলী আদালত-৩ এর বিচারক শারমিন আক্তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নিহত জাকিয়া যে সময় প্রাইভেট পড়তে যান ঠিক সেই সময় স্থানীয় তরলা বাজার থেকে জাকিয়ার রাস্তার দিকে আসছিলেন সুমন। দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে জাকিয়ার সাথে তার মুখোমুখি দেখা হয় বিলের রাস্তায়। সুমন প্রথমে জাকিয়ার মুখ চেপে ধরে পাটক্ষেতের ভিতরে নিয়ে যায়। এরপর পকেট থেকে দড়ি বের করে মুখ ও হাত-পা বেধে তার শ্লীলতাহানি করে। জাকিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে উল্টো রাস্তা ধরে বাড়িতে ফিরে আসে।

এদিকে সন্ধ্যার পরেও যখন জাকিয়া বাড়ি ফিরতেছিলো না তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে শুরু করে। তার শিক্ষকের বাড়িতেও যায়। রাত ১২টা পর‌্যন্ত বিল এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে পরিবারের লোকজন। জাকিয়ার বাড়ির পরিস্থিতি বুঝতে ছেলের জন্য তেল পড়া নেওয়ার অজুহাতে জাকিয়াদের বাড়ির পাশে বাংড়ু কবিরাজের বাড়িতে যায় সুমন। পরে সেখান থেকে অন্য আরো এক কবিরাজের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে ফিরে আসে রাত সাড়ে ৯টায়। রাত ১২টার সময় বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়লে আবারো বের হয় সে। কিন্তু ঘটনাস্থরের আশেপাশে তখনো পরিবারের লোকজন খুঁজতে ছিলো। দূর থেকে টর্চের আলো দেখে সুমন। আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। পরে রাত ৩টার সময় ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একজনের বাড়ি থেকে কোদাল নিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে পাটক্ষেতের ভিতরে গর্ত খুঁড়ে জাকিয়াকে মাটি চাপা দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। তবে মাটি চাপা দেওয়ার সময়ও জাকিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিলো। পরে সুমন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

উল্লেখ্য, গত ৪রা জুলাই দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার ২নং রসুপুল ইউনিয়নের বনড়া গ্রামের একটি বিলের পাশে থেকে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় জাকিয়া আক্তার (১১) নামে চতুর্থ শ্রেণিরতে পড়য়া এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । নিহত স্কুলছাত্রী কাহারোল উপজেলার ৩নং তারগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা। সে একই উপজেলার বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১