৯ অক্টোবর ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,
ডেস্ক রিপোর্ট।।
বিদেশি মুদ্রার বৈশ্বিক মজুত দ্রুত গতিতে নামছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে শুরু করে চেক রিপাবলিক পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজ নিজ মুদ্রার সুরক্ষায় হস্তক্ষেপ করছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তা সংকটের নমুনা, সামনে বিপদ বাড়তে থাকবে।
এ বছর রিজার্ভ প্রায় ১ লাখ কোটি ডলার বা ৭ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১২ ট্রিলিয়ন ডলারে নেমেছে। ২০০৩ সালে ব্লুমবার্গ বৈশ্বিক রিজার্ভের ডেটা সংকলন শুরু করার পর এটাই সর্বোচ্চ পতন বলে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
এই কমার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ মূল্যায়নের পরিবর্তন। ইউরো ও ইয়েনের মতো বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে এক লাফে দুই দশকের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠায় এসব মুদ্রা অ্যাকাউন্টে থাকা সম্পদের মূল্যও ব্যাপক কমেছে। রিজার্ভের এই পতন চলমান মুদ্রা বাজারের অস্থিরতাকেও প্রতিফলিত করে। পরিস্থিতি এমন যে বেশ কয়েকটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে লড়াইয়ে নেমেছে।
এ বছর ভারতের রিজার্ভ ৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলার কমে এ বছর ৫৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে নেমেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এপ্রিল থেকে পুরো অর্থবছরে তাদের হিসাব যতটা কমেছে, তার ৬৭ শতাংশই সম্পদের মূল্য কমার ফল। এ থেকেই ইঙ্গিত মিলছে, রিজার্ভ কমার জন্য বাকি দায়টা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের। এ বছর ডলারের বিপরীতে রুপি ৯ শতাংশ দর হারিয়েছে, শুধু তা-ই নয়, গত মাসে কমতে কমতে সর্বোচ্চ পর্যায়েও নেমেছিল।
ইয়েনের পতনের গতি কমাতে সেপ্টেম্বরে জাপান ২ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে। ১৯৯৮ সালের পর মুদ্রার সমর্থনে এটাই জাপানের প্রথম পদক্ষেপ। এই কারণে এবার ১৯ শতাংশ রিজার্ভ হারিয়েছে। একইভাবে চেক রিপাবলিকের মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের কারণে সেখানে ফেব্রুয়ারির পর ১৯ শতাংশ রিজার্ভ কমেছে।
রিজার্ভ কমার বিষয়ে মার্ক ইনভেস্টমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা অ্যাক্সেল মার্ক বলেন, এটা উপসর্গমাত্র, এখন ফাটল দেখা দিচ্ছে। বিপদ দেখা দেবে তীব্র গতিবেগে।
রিজার্ভ কমার এই পরিমাণ ব্যাপক হলেও রিজার্ভ দিয়ে মুদ্রার মান রক্ষার চর্চা নতুন নয়। বিদেশি পুঁজির বন্যার তোড়ের সময় মুদ্রার অতিমূল্যায়নের গতি থামাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কিনে তাদের মজুত বাড়াতে থাকে। বাজে সময়ে পুঁজি পাচারের ধাক্কা সামলাতে তারা রিজার্ভ ব্যবহার করে থাকে।
ভারতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখনো ২০১৭ সালের পর্যায়ের ওপরে আছে। তাদের নয় মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা আছে। তবে অন্যদের ক্ষেত্রে এটা দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে। এ বছর ৪২ শতাংশ কমার পর পাকিস্তানের রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে ঠেকেছে। এটা দিয়ে তিন মাসের আমদানি দায় মেটানোও সম্ভব নয়।