খাগড়াছড়ি, প্রতিনিধি :
নির্মাণের আট বছরেও চালু হয়নি খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত তিনটি ছাত্রাবাস। এখন পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়নি কোনো জনবল। নষ্ট হয়ে গেছে ছাত্রাবাসের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম। ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে পানির মোটর ও জেনারেটর। ভবনেও ধরেছে ফাটল, পরিত্যক্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে পানছড়ির ছাত্রাবাসটি।
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে এবং দুর্গম এলাকার শিশুদের কথা বিবেচনা করে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালে নির্মাণ করা হয় এই তিনটি ছাত্রাবাস। ওই বছরের ৩১ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমীন ছাত্রাবাসের ভবন উদ্বোধন করেন। প্রতিটি ছাত্রাসাসে ৮০ জন শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। ছাত্রাবাসে বিশ্রাম, পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া এবং খেলাধুলার জন্য রয়েছে। বিদুতের পাশাপাশি সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তবে এর কিছুই কাজে লাগছে না। বড় আশায় বুক বেঁধেছিল দূর পাহাড়ের শিশুরা। ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবে ওরা। কিন্তু নির্মাণের আট বছরেও কারো কোনো উদ্যোগ নেই ছাত্রাবাসগুলো চালু করার। এতে তারা হতাশ।
শিক্ষার্থীরা বলছে, ছাত্রাবাস চালু হলে সেখানে থেকে তারা পড়াশোনার সুযোগ পেতো। খুব তাড়াতাড়ি ছাত্রাবাস চালু করার দাবি জানিয়েছে তারা।
পানছড়ি বাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপাশা সরকার বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা লিখিতভাবে আদেবন করেও কোন সাড়া পাইনি। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আবেদন করেছিলাম। ছাত্রাবাসটি চালু করা অত্যন্ত জরুরী, এতে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমতো এবং দুর্গম এলাকার শিশুরাও পড়ার সুযোগ পেতো।
পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজির মাহমুদ জানান, ৮ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও ছাত্রাবাসগুলো চালু না করা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। ইতিমধ্যে পানছড়ি উপজেলার ছাত্রাবাসটি একটি পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, জনবল নিয়োগ না হওয়ায় ছাত্রাবাসগুলো চালু করা যাচ্ছে না। সার্বিক বিষয় নিয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেছি। আশাকরি শীঘ্রই জনবল নিয়োগ করে ছাত্রাবাসগুলো চালু করা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে ন্যস্ত। ফলে জেলার এই তিনটি ছাত্রবাসের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও যাবতীয় বিষয়াদি দেখ-ভালের দায়িত্ব খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষা বিভাগের আহ্বায়ক মংক্যচিং চৌধুরী বলেন, ছাত্রবাসগুলো চালুর বিষয়ে আমরা খুব শীঘ্রই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।