জামালপুর প্রতিনিধি
অবশেষে জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রোকুনুজ্জামানরোকনকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব (পৌর-২ শাখা) ফারজানা মান্নান সই করা এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়।
আইসিটি মামলায় পলায়ন, কাউন্সিলরদের অনাস্থা, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার ও কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে রাজাকারের নাতি ও বিএনপির ডোনার খ্যাত রোকুনুজ্জামান রোকনকে বরখাস্তের এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, যেহেতু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মেয়র রোকনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট গৃহীত ও ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে এবং তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌরবাসী সেবা বঞ্চিত হচ্ছে, যা পৌরসভার স্বার্থ পরিপন্থী ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোন থেকে সমীচিন নয়- মর্মে প্রতিয়মান হয়েছে। বিধায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩১ (১) ধারা অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরিপত্রের অনুলিপি মেয়র রোকনসহ ৯টি দফতরে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, যৌন কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, অস্ত্রের মহড়া, টেণ্ডারবাজি, গুম নাটক, হত্যার হুমকিসহ শতাধিক অভিযোগে গত ১ মে কাউন্সিলররা মেয়র রোকনকে অনাস্থা ও একইদিন বিকেলে আওয়ামী লীগ পৌর কমিটির সহ-সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করে। এতে তিনি পৌরসভায় অবাঞ্ছিত হয়ে পড়লে ১৫ মে রাতে কলেজ মাঠে নির্মিতব্য মুক্তমঞ্চ ও ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে রোকন এলাকা ছেড়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপিকে জড়িয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য শুরু করেন। এরপর ৫ জুলাই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। দুটি মামলায় গ্রেফতার এড়াতে ১৫ মে থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এরপর কর্মচারীরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মেয়রকে বরখাস্তের দাবিতে পৌরসভা কার্যালয়ে ৬ সেপ্টেম্বর তালা ঝুলিয়ে দেয়। টানা এক মাস আন্দোলনের মাথায় কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী জানান, রোববার বিকেলে মেয়র রোকনের বরখাস্তের চিঠিটি হাতে পেয়েছি। কর্তৃপক্ষের এ আদেশে পৌরবাসীর মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এতে করে পৌরসভায় নতুন করে গতি ফিরে আসবে।
এ ব্যাপারে পলাতক মেয়র রোকুনুজ্জামান রোকনের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ থাকায় নেয়া সম্ভব হয়নি।