০৭ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
দেশের কোথাও করোনার ন্যূনতম চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ন্যূনতম কোনো শিক্ষা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। ক্ষমতাসীন সরকারের সেই স্বদিচ্ছাই নেই। বুধবার (৭ জুলাই) নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, রাজধানী থেকে শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও সংক্রমণ ছড়িয়ে বিভীষিকাময় এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে চোখের সামনে মানুষ মারা যাচ্ছে। কথিত লকডাউনে কয়েক কোটি মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। তিন মাসে একজন মানুষ গড়ে চাল পেয়েছেন ২.৬২ কেজি। আর তিন মাসে একজন মানুষ গড়ে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন ২০.৫৮ টাকা। এগুলো তামাশা আর কিছু না। সার্বিকভাবে ক্ষমতাসীন সরকার করোনা প্রতিরোধে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, স্বাস্থ্য খাতের চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, বিপর্যয়ের মধ্যে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দু’বেলা খাবার নিশ্চিত করার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা; শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঁয়তারা; সব ক্ষেত্রে জনবিচ্ছিন্ন সরকার প্রমাণ করেছে যে, তারা জনগণের সরকার নয়। তাদের কাছে এই দেশের মানুষ নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) অধিকাংশ জরুরি চিকিৎসা উপকরণেরই মজুদ এখন শেষ। বর্তমানে সিএমএসডিতে কোনো হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, রেমডিসিভির ইনজেকশন, কোভিড-১৯ টেস্টিং কিট ও ভেন্টিলেটর নেই। অক্সিজেন সিলিন্ডারের মজুদ আছে মাত্র পাঁচ হাজার। অথচ এসব সরঞ্জাম ও উপকরণের সংস্থান করতে পারেনি সিএমএসডি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে এই চরম সংকট মোকাবিলা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই দেশকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে এই সরকারের পদত্যাগ এবং অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করে এই ভয়াবহ সংকট মোকাবিলা করার দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে দখলদার সরকারকে উৎখাত করে আপৎকালীন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, সামাজিক সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী সংগঠন এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দুই অনুষ্ঠানের প্রভাবে দেশ আজ বিপর্যস্ত। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে জাতিকে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সামনে ফেলে দিয়েছিল। যার খেসারত দিচ্ছে পুরো দেশ। যার ফলশ্রুতিতে এখন দেশে এক দিনে ১১ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত এবং দেড় শতাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এই মানুষগুলোর জীবনের চেয়ে কি ওই দুটো অনুষ্ঠান পালন বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো?