১৫ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পিবিআই। একইসঙ্গে মামলা দু’টি থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামি রহমত উল্যা ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
অভিযুক্ত আসামিরা হচ্ছেন- দেলোয়ার হোসেন দেলু, জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামাল, নূর হোসেন বাদল, আব্দুর রহিম, মোহম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম, সামছুদ্দিন সুমন ওরফে কন্ট্রাক্টর সুমন, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাইন উদ্দিন সাজু, নূর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ, আব্দুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে আরিফ, মিজানুর রহমান ওরফে তারেক ও মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ওরফে সোহাগ মেম্বার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুইজনসহ ১০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৮ আসামি। এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে জামাল উদ্দিন, আব্দুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক নামের চার আসামি।
পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক উৎপল চৌধুরীর কাছে ১০০ পাতার ধর্ষণ ও ৩৩২ পাতার নির্যাতন মামলার চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। পলাতক চার আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে তার ঘরে যান। বিষয়টি দেখতে পেলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার রাত ১০টার দিকে লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।