১০ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তানিয়া আক্তার মীম। পিতা-মাতার অমতে প্রেমিককে করে নিয়েছিলেন জীবনসঙ্গী। কিন্তু সেই সঙ্গীই তাকে তুলে দেয় মানবপাচার চক্রের হাতে। তানিয়া পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতেন খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের বিভিন্ন বিউটি পার্লারে। তানিয়া খুলনার দুর্বার সংঘ ক্লাব সংলগ্ন মুনসুর চৌধুরীর বাড়ির ভাড়াটিয়া আবুল হোসেনের মেয়ে। ২০১৮ সালে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন চিত্রালী সিনেমা হল এলাকার মিরাজ মুন্সির ছেলে রিয়াজ মুন্সিকে। বিয়ের পর খালিশপুরের বিউটি পার্লারে কাজ নেন তিনি। পরিচয় হয় পার্লার মালিক সবুজের সঙ্গে।
সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর স্বামীকে অর্থ লোভ দেখায় সবুজ। অধিক বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে যায় মীমকে। তখনও মীম জানত না তাকে বিক্রি করা হচ্ছে। কলকাতায় নিয়ে গিয়ে তুলে দেয়া হয় দালালদের হাতে। পরে তাকে বিক্রি করা হয় হায়দ্রাবাদের একটি অভিজাত হোটেলে। সেখানে তার ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে মেয়েটি লুকিয়ে ঘটনার বিবরণ জানান মালয়েশিয়া প্রবাসী মামাকে। তিনি ফোন করে ঘটনাটি জানালে ভিকটিমের মা নড়ে বসেন। তিনি মেয়ের খোঁজ নেয়ার জন্য জামাই বাড়িতে যান। সেখানে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে থানায় মামলা করেন। মামলায় জামাই ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দুজনকে রিমান্ডে নেয়া হলে তারা সব ঘটনার বিবরণ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই খুলনা পুলিশ পরিদর্শক মো. আমানউল্লাহ জানান, ১ জুন এ মামলার দ্বিতীয় আসামি সুমন গ্রেপ্তার হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাকে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের প্রথম দিনে আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করতে চাইলে বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. শাহীদুল ইসলামের আদালতে সব বর্ণনা দেন। তিনি আরও জানান, মেয়েটি হায়দ্রাবাদের পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।