• শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন

ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ‌‘আধ্যাত্মিক’ ঝাড়ফুক, পুলিশ দেখেই দৌড়!

রিপোর্টার : / ২৭৪ বার পঠিত
আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১

১০ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

ঢাক-ঢোলসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সাপে কাটা এক তরুণীর চিকিৎসা করছিলেন কথিত কবিরাজ ও তার দল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দল নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। পরে পুলিশ অসুস্থ তরুণীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়।

বুধবার(৯ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের আগরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কথিত কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেন (৩৫) মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার দলের সদস্যরা হলেন- দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের মো. তফেল, মো. হাফিজুল, মো. বাপ্পি, মো. হানিফ ও মো. শাজাহান।

জানা যায়, রোববার রাতে ওই তরুণীকে সাপ বা বিষাক্ত কোনো পোকা কামড় দেয়। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ওই রাতেই তাকে কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝাড়ফুঁক শেষে আবার বাড়ি ফিরে যান। ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার (৮ জুন) তরুণীর স্বজনরা গিয়ে কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেনকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

ওই দিন বেলা ১১টার দিকে বাড়ির উঠানে সামিয়ানা টাঙানো হয়। কলা গাছের সামনে মোমবাতি, আগরবাতি ও ধূপ জ্বলানো হয়। ঘেরাও দেওয়া সীমানার মধ্যে একটি চেয়ারে বসানো হয় তরুণীকে। এরপর শুরু হয় ‘আধ্যাত্মিক’ চিকিৎসা। কিছুক্ষণ পর পর ঢাক-ঢোলসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মন্ত্র পড়ে তরুণীকে ও কলাগাছকে ঝাড়ফুঁক করতে থাকেন কবিরাজ।

এভাবে মঙ্গলবার গড়িয়ে চলে বুধবার। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারেক বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ নিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ দেখে দল নিয়ে পালিয়ে যান কবিরাজ।

এদিকে, সাপে কাটা রোগীর অদ্ভুত এই চিকিৎসার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমে ওই বাড়িতে।

তারুণীর স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার সকালে কবিরাজ মো. আলী আকবর হোসেনকে জানালে তিনি বাড়িতে এসে ঝাড়ফুঁক করেন। তিনি জানান, ওই তরুণীকে বিষধর সাপে কামড়েছে শুধু ঝাড়ফুঁকে নয় লাগবে ‘আধ্যাত্মিক’ চিকিৎসা। এ জন্য তরুণীর বাবার কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে তার সঙ্গে ৩৭ হাজার টাকার চুক্তি হয়। শর্ত অনুযায়ী, কবিরাজের সঙ্গে ছয় সদস্যের দল রোগীর বাড়িতে থাকবে, খাওয়া-দাওয়া করবে। বাদ্য-বাজনার তালে তালে মন্ত্র পড়ে ‘আধ্যাত্মিক’ চিকিৎসা দেওয়া হবে। এভাবে তিন, পাঁচ বা সাত দিনের মধ্যে তরুণীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার গ্যারান্টিও দেন কবিরাজ মো. আলী আকবর।

তরুণীর বাবা জানান, এই কবিরাজ এমন অনেক রোগী এর আগেও ভালো করেছেন বলে তিনি শুনেছিলেন। কবিরাজের সঙ্গে তার ৩৭ হাজার টাকার চুক্তি হয়েছিলো। চুক্তির ৩৭ হাজার টাকা চিকিৎসার আগেই নিয়ে নেন কবিরাজ।

জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারেক বলেন, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার নামে যা করা হচ্ছিলো তা চিকিৎসা নয়, ভণ্ডামি চলছিলো। বিষয়টি জানতে পেরে আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে হাজির হই। তবে পুলিশ দেখে ভিড়ের মধ্যে কবিরাজ তার দল নিয়ে পালিয়ে যান।

আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (আইসি) পরিদর্শক মহিদুল আলম বলেন, চেয়ারম্যানের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্ত তার আগেই কথিত কবিরাজ তার দল নিয়ে পালিয়ে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১