বিশ্বের ১১১টি দেশে পালিত হয় বাবা দিবস। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই দিবসটি পালন করা শুরু হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেপ্টেম্বরের প্রথম রোববার বাবা দিবস পালন করে থাকে।
আজ বিশ্বের সব বাবার প্রতি ভালোবাসা জানাচ্ছেন সন্তানেরা। প্রতিদিন বাবাকে হাসিখুশি রাখতে কিছু সময় বের করে নেওয়া প্রত্যেক সন্তানের উচিত। আমার বাবা সত্তুর্ধ এর মধ্যে দুই বার হার্ট অ্যাটাক, একবার ব্রেইন স্ট্রোক করে স্রস্টার কৃপায় বেচে আছে। স্বাভাবিক চলাচল করতে পারলেও ওষুধ নির্ভর আর বার্ধক্যে পৌঁছে দিয়েছে জীবনের শেষান্তে প্রায়। কার কখন ডাক আসে স্রস্টা জানেন। আমি আমার বাবার বড় সন্তান। থাকি এক ছাদের নিচে। কর্মের তাগিদে ঘর থেকে বের হই বাবার চেহারা দেখে। কখনো দেখি ঘুমিয়ে আছে আবার কখনো পায়চারি করতে। বরাবরই বাবার পরে রাতে ঘুমাতে যাই। বাবা যখন ঘুমিয়ে তখনও জোরে শাষ প্রশ্বাস এর শব্দ আমাকে পিড়া দেয় যা কখনো কারো সাথে সেয়ার করে বুঝানো যাবেনা। ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’ ঠিক তেমনি। যখনই বুঝতে শিখেছি তখনই বাবা প্রবাস জীবন শুরু করে জীবন ও জীবীকার তাগিদে ইউরোপ ও এশিয়ায়। সবার বাবাই অতুলনীয় আমার বাবাও এর ব্যতিক্রম নয়। দাদা দাদী, চাচাদের জন্য ও ছিলো বা আছে আদর ও সম্মানের। আমার বাবার সন্তান হয়ে যথেষ্ট ইচ্ছা থাকার পরও অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় মনের মত করে বাবার ইচ্ছা পূরণ এ ব্যর্থতার দায় আছে আমার। যদি বাবা ক্ষমা করে তা হলেই ক্ষমা না হয় জন্মই নিরর্থক। বাবা-মা আমার প্রান। আজ বাবা দিবস তাই বাবাকে নিয়ে লিখা। এখনো অসুস্থ বাবা আমার মন খারাপ থাকলে বা কোন খারাপ খবর শুনলে বাসায় আসার সাথে সাথে কিরে মন খারাপ? চিন্তা করিসনে এই কথা প্রতিনিয়ত বলে, তখন বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালো বাসায় অশ্রুসিক্ত হই। তখনই মনে পরে আমি নিজেও বাবা হয়েছি বাবার প্রতি নিজের ভুল গুলো নিয়ে অনুশোচনায় ভোগী।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের ওয়ালগুলো ভরে গেছে প্রিয় বাবাদের ছবিতে। যাদের বাবা বেঁচে আছেন তারা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ছবি আপলোড করবেন। আর যাদের বাবা নেই, তারা বাবার ছবি পোস্ট করে, বাবাকে নিয়ে লিখে স্মৃতিচারণ করবেন।আমি আমার বাবার স্বৃতিচারণ করে শেষ করতে পারবোনা শুধু বলছি আমার বাবা আমার হৃদয়ে লালিত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে ৫ জুলাই এই দিবস পালন করা হয়। ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। আমার শেষ কথা আমরা বাবাকে জীবিত থাকুক আর মৃত হোক প্রতিনিয়ত বাবাকে হৃদয়ে ধারণ করবো। ভালো থাকুক আমার বাবা সহ পৃথিবীর সকল “বাবা “। আমরা সবাই বাবার খেদমত করার তৌফিক কামনা করি স্রস্টার কাছে।
লেখক – সাংবাদিক ।