০৩ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে নেত্রকোনায় সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে জমির পর জমি। জেলার দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী, বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বেশ কিছু অংশ পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে আট গ্রামের মানুষ।
ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সোমেশ্বরীর গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকুও। শুক্রবার (২ জুলাই) এমনটাই জানালেন কামারখালী এলাকার শত শত মানুষ।
কামারখালী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্থায়ী কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন ওই এলাকার আট গ্রামের মানুষ। থামছে না নদীভাঙন, বাড়ছে সাধারণ মানুষের কান্না। নতুন করে পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয়সহ ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী।
জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভাঙনরোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে ৯০০ মিটার এলাকায় ছয়টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়। তবে ধীরগতিতে কাজ চলায় এখনো তা শেষ হয়নি। এলাকার ৯০০ মিটারের মধ্যে মাত্র ২০০ মিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলানোর জন্য ভরে রাখা শত শত ব্যাগ পড়ে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ট্রাক্সফোর্সের তদারকি না থাকায় তা নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া এ কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকে তাগিদ দেয়া হলেও তাতে কোনো কাজ না হয়নি।
কামারখালীর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতিতে যে কাজ তিনমাসে শেষ হওয়ার কথা, তা একবছরেও শেষ হচ্ছে না। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছি আমরা।
নেত্রকোনা জেলার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, নদীতে নতুন করে পানি বাড়ার ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাউবোর টাক্সফোর্স ভাঙন এলাকায় ফেলানোর জন্য বস্তাগুলো গুনে না দিলে ঠিকাদার ফেলতে পারবেন না। ফলে কাজে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই নতুন করে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসকদের চেষ্টায় ভাঙনরোধে ওই এলাকায় জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।