০৫ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
বরগুনা শহরের কলেজ সড়ক খামারবাড়ি এলাকায় যৌন হয়রানি ও মিথ্যা বদনাম সহ্য করতে না পেরে মাকে চিরকুট লিখে সামিয়া নামে ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে বাসার বাথরুম থেকে সামিয়ার গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী অভিযুক্ত বাড়ির মালিকের ছেলে দুই সন্তানের জনক জামালকে (৩২) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
সামিয়া বরগুনা কলেজিয়েট স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী এবং সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের রফিকের মেয়ে।
জানা যায়, সামিয়ার বাবার সঙ্গে মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ৫-৬ মাস আগে দ্বিতীয় স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে কলেজের উত্তর পাশে খামার বাড়ির সামনে আবুল বাশার নামে এক ব্যক্তির বাসা ভাড়া নেয় সামিয়ার মা। পাশের বাসায় আবুল বাশারের ছেলে জামাল তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
সামিয়া বাথরুমে গোসলে গেলে জামাল প্রায়ই উঁকি দিয়ে দেখতো এবং অশ্লীল ইঙ্গিত করতো। বিষয়টি সামিয়া তার মাকে এবং জামালের স্ত্রীকে জানায়। এলাকার অনেকেই বিষয়টি জেনে যায়। সামিয়া বাড়ির বাইরে গেলেই তাকে জামাল অশ্লীল মন্তব্য ও ইঙ্গিত করতো। একপর্যায়ে জামাল সামিয়ার বিরুদ্ধে এলাকায় মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয়। দুদিন আগে জামাল অশ্লীল মন্তব্য করলে সামিয়ার মা, মোবাইলে জামালের বাবাকে বিষয়টি জানায়।
সামিয়ার মা সুমি আক্তার সাংবাদিকদের জানায়, শনিবার বাথরুমে সামিয়া গোসল করার সময় জামাল উঁকি দিলে সামিয়া পানি ছুড়ে মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল অশ্লীল গালি দেয়।
আত্মহত্যার আগে সামিয়া তার মাকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লিখে যায়। চিঠিটি হুবহু উল্লেখ করা হলো: ‘মা আমার নামে তারা যে বদনাম উঠিয়েছে তাতে আমি এই পৃথিবীতে থাকতে পারি না। আমি একটি খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। মা, তুমি ভালো থেকো। আমাকে কেউ বিশ্বাস করে না তুমি ছাড়া। ইতি তোমার সামিয়া। ‘
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। এলাকাবাসী উত্ত্যক্তকারী একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তদন্ত করে আত্মহত্যার কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বরগুনা সদর সার্কেল মেহেদী হাসান বলেন, আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। এ বিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।