• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

মারা গেছে বাবা, লাশ আগলে ছোট্ট মেয়েটি!

ডেস্ক রিপোর্ট / ২০৯ বার পঠিত
আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১

০৬ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজে মা তানজিলা বাইরে ছোটাছুটি করছেন। আর হাসপাতালের বারান্দায় বাবার মরদেহ আগলে নিয়ে বসে আছে সাত বছরের শিশুকন্যা মরিয়ম খাতুন। শিশুটির সামনে স্ট্রেচারে রাখা বাবার নিথর দেহ। বাড়ি থেকে আসা ব্যাগপত্র নিয়ে মেঝেতে বসা সে। কাপড়-চোপড়ের সাথে বাবাকে বাতাস করার জন্য হাতপাখাটিও আনতে ভোলেনি। সেটিও আগলে রেখেছে। কিন্তু বাবা আর নেই! দু’চোখে ঝরছে পানি। কষ্টে নীল হয়ে গেছে ভেতরটাও। বাবার তীব্র শ্বাসকষ্ট আর যন্ত্রণা শুধু নীরবেই দেখে গেল সে।

সোমবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর পোরশা উপজেলা থেকে সর্দি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন মেয়েটির বাবা মুজিবুর রহমান (৪২)। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির আগেই জরুরি বিভাগের সামনে মারা যান তিনি। হাসপাতালেই মরদেহের পাশে বসে কাঁদছিল মেয়ে মরিয়ম। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অসহায় ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে নওগাঁ জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার ভিডিওটি জেলা প্রশাসকের নজরে এলে তিনি পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নে কলনীবাজার গ্রামে মৃত মুজিবর রহমানের বাড়ি খুঁজে বের করেন। পরিবারটিকে ১০ হাজার টাকা দেন তিনি। একটি মুদি দোকান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

মৃত মুজিবুর রহমানের স্ত্রী তানজিলা বেগম জানান, বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর ও শ্বাস কষ্টে ভুগছিলেন তার স্বামী। প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। এরপর পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে এবং পরে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে তাকে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়।

সোমবার সকালে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার পর ভর্তির আগেই মারা যান মুজিবর রহমান। তানজিলা বলেন, ‌‘তখন লাশের পাশে আমার ৭ বছরের মেয়েকে রেখে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে যাই। বাবাকে হারিয়ে লাশের পাশেই বসে কান্না করছিল আমার ছোট মেয়ে মরিয়ম।’

ওই সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক লোক ঘটনাটি ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড় দেন বলে জানা গেছে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ভিডিওটি ফেসবুকে দেখার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজাকে ওই ব্যক্তির বাড়ি খুঁজে বের করে পরিবারের খোঁজখবর নিতে বলি। তার বাড়ি খুঁজে পাওয়ার পর দুপুরের দিকে তাৎক্ষণিক মৃত ব্যক্তির স্ত্রী তানজিলার হাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাকে একটি মুদি দোকানও করে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক জানান, মুজিবুর রহমান ওই পরিবারের একমাত্র উর্পাজনকারী ছিলেন। পরিবারে তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১