• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন

‘স্বেচ্ছায়’ হিজড়া হচ্ছেন চাঁদপুরের ছেলেরা

ডেস্ক রিপোর্ট / ২০৫ বার পঠিত
আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

০৯ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ

তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদেরকে দেখলে ‘ভয় কিংবা লজ্জা’ পান অনেকেই। তারা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে কখনো কখনো মানুষের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। আবার কেউ টাকা দিতে না চাইলে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। চাঁদপুরে এমন হিজড়াদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন ওষুধ সেবনের মাধ্যমে হরমোনের পরিবর্তন ঘটিয়ে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদেরকে হিজড়ায় রূপান্তর করছেন চাঁদপুরের অনেক ছেলে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী মাসুম বলেন, ‘ওষুধের মাধ্যমে কোনো ছেলে হিজড়া হওয়ার সুযোগ নেই। তবে তারা বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে হরমোনের পরিবর্তন ঘটিয়ে হয়তো মেয়েলি ভাব তৈরি করতে পারে। ওই সব ছেলে হয়তো মেয়েলি ভাব-ভঙ্গি আয়ত্ত করে নিজেদেরকে হিজড়া হিসেবে উপস্থাপন করছে।’ গত সোমবার শতাধিক হিজড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা নিতে আসে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে। ওই সময় কুয়াশা হিজড়া গ্রুপে থাকা পাঁচ-ছয়জন হিজড়া ছেলের আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। তাদের সম্পর্কে অন্য গ্রুপের হিজড়াদের সঙ্গে কথা বলে মেলে ভয়ংকর তথ্য। ছেলে হিজড়া গ্রুপে থাকা অনেক ছেলেই ইচ্ছাকৃতভাবে হিজড়া হয়েছেন। এ ছাড়া তারা শরীরে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করে ও আচরণ-ভঙ্গি পাল্টিয়ে অনেকে হিজড়া হচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁদপুরের ছেলে হিজড়াদের গ্রুপের নাম ‘কুয়াশা’। এ গ্রুপের দলনেতা হলেন শাওন ওরফে তানিয়া। শাওন চাঁদপুর শহরের ছেলে। তিনি শহরের ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। এ ছাড়া একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের (নৃত্য) সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার মধ্যে পরিবর্তন শুরু হয়। কয়েকমাস পর শাওন হিজড়ায় রূপান্তরিত হন। এখন সেই শাওন চাঁদপুরের ছেলে হিজড়াদের দলনেতা। শুধু শাওনই নয়, তার মতো অনেক ছেলেই ইচ্ছে করে নাম লিখিয়েছেন হিজড়াদের খাতায়।

এ বিষয়ে হিজড়া দলের নেতা শাওন বলেন, ‘আমাদের গ্রুপে আগে ৭-৮ জন ছেলে হিজড়া ছিল। এখন প্রায় ৭০ জনের মতো রয়েছে।’ তবে তার দলের অনেকেই ছেলে হয়েও কেন ইচ্ছাকৃত হিজড়া হয়ে যাচ্ছে-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বেশি কিছু বলা যাবে না।’

ছেলে হিজড়া গ্রুপের আরেক সদস্য মাইনুদ্দিনকে (২৪) সন্দেহজনক হিজড়াদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো কথা বলেননি। এ সময় অন্য হিজড়াদের নিয়ে পালিয়ে যান মাইনুদ্দিন।

এদিকে, মৌসুমি হিজড়া গ্রুপের সদস্য কারিনা (৩০) বলেন, ‘আমাদের হিজড়া গ্রুপে দুইশর মতো হিজড়া রয়েছেন। সরকার যদি প্রকৃত হিজড়াদের থাকার এবং কাজ করার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে আর মানুষকে হয়রানি করতাম না। আমরাও চাই আমাদেরকে সামাজিক মর্যাদা দেওয়া হোক। যাতে করে আমরাও অন্যদের মত সমাজে বসবাস করতে পারি।’

ছেলে হিজড়াদের সম্পর্কে কারিনা বলেন, ‘অনেক ছেলে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে মেয়েদের মতো শরীর বানায়। তারা মেয়েদের জামাও পরে। কিন্তু তাদের কাজের সঙ্গে আমাদের মিল নেই।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ইউএনডিপির মাধ্যমে তাদের থাকা-খাওয়া এবং কর্মস্থানের একটি ব্যবস্থা হচ্ছে। যারা তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে, তাদেরকেই চিহ্নিত করে এই প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১