কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় প্রবাসী দম্পতির নগদ টাকা ও স্বর্ণ ছিনতাইয়ের জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় গ্রুপের ৩জন আহত হয়েছে এবং ভাংচুর ও লুটপাট ও গবাদি পশু নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আহতরা হলো শামীম(৩২), মাসুদ(১৬) ও মোস্তফা(৩৫)। এদের মধ্যে শামীমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা প্রেরণ করেছে। বাকী ২ জন কুমিল্লা কলেজ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামে। এ ঘটনায় জড়িত জামাইসহ ৩ জনকে আটক করে কুমিল্লা কোর্টে প্রেরণ করেছে তিতাস থানা পুলিশ। ওই গ্রামের ফজলু মেম্বারের ছোট ভাই শামীমকে একই গ্রামের রমজানের নেতৃত্বে সোমবার রাতে এলোপাতারী কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে প্রতি পক্ষের দাবী।
আহত শামীমকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা প্রেরণ করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। এঘটনায় জড়িত ৩ জনকে রাতেই গ্রেফতার করেছে তিতাস থানা পুলিশ। আটকরা হলো নয়াকান্দি গ্রামের ইয়বা ব্যবসায়ী ডালিম(৩৫), একই উপজেলার কালাই গোবিন্দপুর গ্রামের নেক্কার(৩২) ও উজ্জল (৩০)।
আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কদমতুলি গ্রামের মৃত সুবিদ আলীর ছেলে মালয়শিয়া প্রবাসী আইয়ুব আলী ও তার স্ত্রী মালয়শিয়া নাগরিক নয়াকান্দি গ্রামে তার ছোট বোন নাজমার বাড়িতে রবিবার রাতে বেড়াতে আসলে একই গ্রামের রমজান মিয়ার বাড়ির সামনে পথরোধ করে মালয়শিয়ান রিংগিত,বাংলা টাকা,স্বর্ণ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এঘটনায় আইয়ুবের বোন নাজমা বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা করলে,তারই জের ধরে সোমবার রাতে শামীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করে রমজান গ্রুপ।
আইয়ুব জানায়, নয়াকান্দি গ্রামে আমার বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাই এবং ওই গ্রামের একটি মাদ্রাসায় কিছু অনুদান দেয়ার জন্য নগদ টাকা নিয়ে যাই। রবিবার রাত আনুমানিক ৯টায় রমজানদের বাড়ির সামনে পৌঁছলে রমজানসহ ২০/২৫ জন আমার পথরোধ করে আমার সাথে থাকা নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা,মালয়শিয়ান রিংগিত ১১হাজার,আমার স্ত্রীর ব্যবহৃত ১১৯ গ্রাম স্বর্ণ ও ৩ টি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আইয়ুবের পক্ষের ওই গ্রামের আজারুল বলেন, রবিবার রাতে আইয়ুবকে নিয়ে তার বোনের বাড়িতে যাওয়ার পথে রমজান গং আমাকেসহ হামলা করে এবং আইয়ুবের সাথে থাকা নগদ টাকা,স্বর্ণ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এঘটনায় আইয়ুবের বোন নাজমা বাদী হয়ে মামলা করলে তারই জের ধরে সোমবার রাতে আমাদের লোক শামীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপতারী কুপিয়ে আহত করে। রাতেই শামীমের মৃত্যুর খবর শুনে রমজান গ্রুপের লোকজন তারা নিজেরাই তাদের ঘর ভাংচুর করে মালামাল সরিয়ে নিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
আইয়ুবের বোন নাজমা বলেন, রমজানের বিরুদ্ধে ৬মাস পূর্বে আমি একটি মামলা করেছিলাম।সেই মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করে।
এদিকে রমজান আলী বলেন ,আইয়ুব ও তার বোন জামাই ফইজুল মালয়শিয়া থাকে,তাদের সাথে আমার ছোট ভাই নুরুল আলম মালয়শিয়াতে মাছের প্রজেক্ট করেছে। সেখানে মাছ বিক্রির ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। রবিবার রাতে আইয়ুব আমাদের গ্রামে আসলে তাকে নিয়ে শামীমসহ ৩০/৩৫ জনের একটি দল আমার বাড়ির সামনে দিয়ে শোডাউন করতে থাকে এমন সময় আমার ভাই আইয়ুবের নিকট টাকা চাইলে আমার ভাইকে মারধর করে । এতে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।এসময় আমাদের পক্ষের মাসুদ ও মোস্তফা এবং তাদের পক্ষের শামীম আহত হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে শামীম মারা গেছে এমন গুজব ছড়িয়ে আমাদের পক্ষের হালিম,ডালিম,দিলু মিয়া,মতিন মিয়া,রমজান মিয়া,জাকির হোসেন,আনোয়ার হোসেন ও ওসমান মিয়া ঘর ভাংচুর করে এবং ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে যায় এছাড়াও ৮টি গরু নিয়ে যায় প্রতি পক্ষের লোকজন এবং আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা জামাই নেক্কারকে পুলিশ ধরে নিয়ে কোর্টে প্রেরণ করেছে।
এবিষয়ে ওসি সৈয়দ মোহাম্মদ আহসানুল ইসলাম বলেন ,এঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে এবং ৩জনকে আটক করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।