সোহাগ মজুমদার ,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :
ঋতু বৈচিত্র্যের বাংলাদেশে চলছে মধু মাস। আর মধু মাস জ্যৈষ্ঠে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে ম-ম গন্ধ ছড়াচ্ছে আম, কাঁঠাল ও লিচু। বাহারি ফলে ঠাসা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজার। আর এসব ফলের মধ্যে সবথেকে বড় জায়গা দখল করেছে কাঁঠাল।
খাগড়াছড়িতে সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট বসে মাটিরাঙ্গায়। ইতোমধ্যে মাটিরাঙ্গা বাজারে জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট। শনিবার হাটবার হলেও বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্থানীয় বিক্রেতারা কাঁঠাল নিয়ে আসতে শুরু করেন জেলার সর্ববৃহৎ এ কাঁঠাল বাজারে। এ দুই দিন মাটিরাঙ্গার এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে কাঁঠালের হাট।
আর শনিবারের হাটবারকে সামনে রেখে মাটিরাঙ্গায় এসে জড়ো হন নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্ললা ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা। তারা ট্রাকে ট্রাকে কাঁঠাল নিয়ে যান সমতলের জেলাগুলোতে। সমতলের জেলাগুলোতে পাহাড়ের কাঁঠালের চাহিদা ব্যাপক বলে জানান বাজারে আসা এসব পাইকাররা।
গেল শনিবার কাঁঠালের এ হাট ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় বাগানীরা কাঁঠালের স্তূপ সাজিয়ে বসে আছেন। প্রতিটি স্তূপে রয়েছে শত শত কাঁঠাল। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা দরদাম করে কিনছেন।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমতলে পাহাড়ের কাঁঠালের চাহিদা থাকায় তারা অনেকটা চড়া দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাহাড়ের কাঁঠাল। তবে সমতলের চাহিদার কথা মাথায় রেখে স্থানীয় বিক্রেতারা এখনও দাম ধরে রেখেছেন। আর কয়েক দিন পর কাঁঠালের দাম অর্ধেকেরও নিচে নেমে যাবে।
মাটিরাঙ্গা বাজারে কাঁঠাল নিয়ে আসা খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলার সবচেয়ে বড় এ কাঁঠালের হাটে উপজেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদ ছাড়াও লোগাং, পানছড়ি, মারিশ্যা, মাইসছড়ি, ভুয়াছড়ি, বাঘাইছড়ি থেকে ট্রাক ও চাঁদের গাড়ি বোঝাই করে কাঁঠাল নিয়ে আসেন স্থানীয় খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা। স্থানীয় বাজারে প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ১০০ টাকা দরে। সমতলের জেলাগুলোতে এ কাঁঠালের দাম তিনগুন বেশি।
মাটিরাঙ্গার কাঁঠাল বিক্রেতা মো. আবদুল খালেক জানান, মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্ন বাগান ক্রয় করেন। পরে মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বিক্রি করে থাকেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে।
মাটিরাঙ্গা বাজারের ইজারাদার মো. জসিম উদ্দিন জানান, এ মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে এ বাজার থেকে কমপক্ষে ১০০ ট্রাক কাঁঠাল সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। যা থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আদায় করছে সরকার। এছাড়াও গাড়িতে কাঁঠাল লোড-আনলোডসহ অন্যান্য কাজে অন্তত দুইশ শ্রমিক নিয়োজিত থাকায় শ্রমিকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরেছে।
তবে খাগড়াছড়িতে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা গেলে চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফল সংরক্ষণ করে আরও ভালো দাম পেতেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ জাতীয় আরো খবর..