১৩ জুন ২০১৯, বিন্দুবাংলা টিভি. কম ,ডেস্ক রিপোর্ট :
আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) জন্য সরকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তিনি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা ঘাটতি রেখে তৈরি করেছেন এই বাজেট। জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শরমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী এই বাজেট উপস্থাপন করেন।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘এ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে। নতুন বছর এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
জানা গেছে, দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসৃজন ও মানব সম্পদকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি হচ্ছে এবারের বাজেট। ২০২০ সালে পালিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে পূর্তি হবে ২০২১ সালে। এ কারণেই ২০১৯- ২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি হবে সব দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রস্তাবিত বাজেটে দক্ষতা বাড়াতে জনপ্রশাসন খাতে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ১ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২৯ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৭ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। যা মুল বাজেটের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব রা হয়েছে ৭৯ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। কৃষিখাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২৫ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৭ শথাংশ। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে পরিচালন ও উন্নয়ন বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৬৭ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা।
যা মোট বাজেটের ৭ দশমিক ২ শতাংশ। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে সরকারের নেওয়া ঋণ পরিশোধ বাবদ ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৭ হাজার ১১৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটর ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। গৃহায়ন খাতে ব্যয় বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৬ হাজার ৬শ কোটি টাকা। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২৮ হাজার ৫০ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১২ দশমিক ২ শতাংশ।
এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনুমোদন দেওয়া হলেও সে বৈঠকেও আধঘণ্টা দেরিতে পৌঁছান অর্থমন্ত্রী। দুপুর ১টা ২১ মিনিটে বৈঠকে যোগ দেন তিনি। এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তাফা কামালের এটিই প্রথমবারের মতো বাজেট পেশ। এটি দেশের ৪৮তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম বাজেট। বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পক্ষ থেকে সংসদে বাজেট বক্তৃতা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নতুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট সংসদে পেশ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আকার চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে না পারা ও উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকারের চেয়ে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি। আর চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের আকারের চেয়ে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ বড়।