২৮ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। একই সাথে মামলার তদবিরকারক সাঈদীর বড় ছেলে শামীম সাঈদী ও সেজ ছেলে মাসুদ সাঈদীকে আদালতে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলা সংশ্লিষ্ট সকল নথি আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সরবরাহ করার জন্যও দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল। অন্যদিকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে ছিলেন আব্দুস সোবহান তরফদার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, মতিউর রহমান আকন্দ ও রোকন রজা।
আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার চার্জ গঠনের শুনানির ধার্য দিনে সাঈদীর পক্ষের আইনজীবীদের কাছে সাক্ষীদের (১৬১) বিষয়ে ডকুমেন্ট দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। আবেদন গ্রহণ করে সব নথিপত্র সরবরাহ করার জন্যে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার তদবিরকারক উনার বড় ছেলে শামীম সাঈদী ও সেজ ছেলে মাসুদ সাঈদীকে আদালতে ঢুকতে দেয়া হতো না। আজ তাদের দুইজনকে আদালতে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
এই আইনজীবী আরো বলেন, সাঈদীর বয়স ৮২ বছর, তার হাটতে চলতে সমস্যা হয়। তাই উনাকে গাড়িতে করে নিজ খরচে আদালতে আসার অনুমতি দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। আদালত তাকে মাইক্রোবাসে করে নিজ খরচে আসার অনুমতি দিয়েছেন।
অর্থ আত্মসাতের মামলায় দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ছয় জন আসামি। বাকি পাঁচ আসামি হলেন— ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজকল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ এবং আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে আছেন।
২০১০ সালের ২৪ মে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরের বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত।
এর আগে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য গত ৭ ডিসেম্বর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালতে হাজির করা হয়েছিল দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে। শুনানির জন্য প্রস্তুত নয় জানিয়ে সেদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী আবেদন করলে আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করে দেন।
ওই দিন (৭ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে আয়কর ফাঁকির মামলাতেও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা ছিল। তবে মামলায় সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সময় আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৬ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন আদালত।