২৩ জুন ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
ভুয়া আগাম জামিন আদেশ তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় করা মামলায় ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ জালিয়াতির মামলায় বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া।
তিনি বলেন, ‘বগুড়ার ৩০ আসামির জামিন জালিয়াতির ঘটনায় মামলা হয়। ওই মামলায় সিআইডির তদন্তে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজু, বগুড়ার আইনজীবী তানজীম আল মিসবাহ, রাজু আহমেদ রাজুর ক্লার্ক সোহাগ শেখ, কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানাসহ চারজনের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে সোহাগ শেখ গ্রেপ্তার হলে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরও কিছু আসামির নাম উঠে আসে।’
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন। আদালত তখন অন্যান্য আসামিরা এখনও গ্রেপ্তার হচ্ছে না কেন জানতে চান। তখন তদন্তকারী জানান, আসামিদের খুঁজে পাচ্ছেন না। সে সময় আসামির আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজু হাইকোর্টে পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করেন।
এ সময় আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আসামিরা হাইকোর্টে এসে পক্ষভুক্ত হতে চায়, আর আপনি আসামিদের খুঁজে পান না?’ আদালত তাদেরকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
পরে তদন্ত কর্মকর্তা আসামি আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১২ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। এ মামলায় গত ৯ জুন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই আইনজীবী ও কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়। আসামিদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জাল আদেশ দাখিল করে বগুড়ার আদালত থেকে জামিন নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাইকোর্ট গত ২৪ ফেব্রুযারি এক আদেশে যুবলীগের সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
এই আদেশ বাস্তবায়ন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়াতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোটভাই মশিউল আলম গত ১০ ফেব্রুয়ারি বগুড়া থানায় মামলা করেন।
মামলায় যুবলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলামসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের জামিন নেয়ার একটি আদেশনামা (জামিন আদেশ) তৈরি করা হয়।
আদেশনামায় দেখানো হয়েছে যে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে আসামিদের ৬ সপ্তাহের জামিন দিয়েছে। এই জামিন শেষে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।
এই ভুয়া আদেশের তথ্য সংশ্লিষ্ট আদালতের নজরে আসে। এরপর এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আরজি জানান। পরে হাইকোর্ট এদের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দেয়। পরে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন মামলা করে।