১আগষ্ট ২০২২ইং,আজকের মেঘনা ডটকম,
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এ দিকে আওয়ামিলীগ বলছেন কমিশনের প্রতি আস্থা আছে। রাশেদা সুলতানা বলেন ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুনে আসছি নির্বাচন কমিশনে কাজের কোনো পরিবেশ নাই। নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। এতে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি একেবারেই নেই। আমাদের এই ভাবমূর্তিটা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি।’এ সময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সরকারে আছি কিন্তু এই সংলাপে এসেছি দল হিসেবে। নির্বাচনে কমিশনের ভাবমূর্তি আছে এবং অংশগ্রহণ সব নির্বাচনে ৬০ ভাগের বেশি, ৭০ শতাংশ। কাজেই পার্টিসিপেশন নেই এটা কে বলে? জনগণের অংশগ্রহণ আছে।আস্থা আছে বলেই তারা ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীরাও অনেক নির্বাচনে জয়লাভ করছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা আছে।’
তবে কমিশনারের এমন বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাঁরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি আছে বলেই মানুষ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পড়ছে। আওয়ামী বিরোধীরা নির্বাচনে বিজয়ী হচ্ছে। রোববার নির্বাচন নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপের আলোচনা এসব কথা ওঠে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতৃত্বে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফর উল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপপু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন নাহার ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সংলাপে অংশ নেন।
সংলাপে কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুনে আসছি নির্বাচন কমিশনে কাজের কোনো পরিবেশ নাই। এখানে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। এরা নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। বিভিন্ন ধরনের কথা বার্তা। এতে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি একেবারেই নেই। ভোটাররাও ভোট দিতে আগ্রহী নয়। তারা ভোট কেন্দ্রে আসতে চায় না। তারা নির্বাচনে কোনো আনন্দ বা আগ্রহ পাচ্ছে না। হয়তো ভ্রান্ত ধারণা বা যেকোনোভাবে হোক এটা হয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো আমাদের নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভাবমূর্তিটা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি। এটা আমাদের দূর করার চেষ্টা করতে হবে। আমার অংশীজনসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এর থেকে উদ্ধার করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আপনারা সরকারে আছেন, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আপনাদের বড় দায়িত্ব রয়েছে। এই অবস্থাটা তৈরি করে দেওয়া। আমি বলব, যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত আছেন—বিশেষ করে প্রার্থী, ভোটার, সমর্থক আপনারা একটু আপনাদের আচরণটাকে একটু সংযত করবেন। আমি এটা সব দলের সব প্রার্থীদের বলব।’
কমিশনের এ কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘যারা সংলাপে এসেছে তারা কিন্তু নির্বাচনে যাবে। তারা মনে করে সব কথা যদি সরকার দলের মতো করে যায় তাহলে হয়তো আমরা দালাল হয়ে যাব। তারা সরকারের সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে আছে সেটা মনে হবে। এ জন্যই তারা কিছু ব্যতিক্রমধর্মী কথা বলে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নির্বাচনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আর একটি বড় ও সরকারে থাকা রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব আপনাদের সহায়তা করা।’
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘আগামী নির্বাচনটা যে হবে এটা নিয়ে যেন আমরা সবাই ইতিবাচক কথা বলি। তারা যত কথাই বলুক বিএনপি নির্বাচনে আসবে। আমরা এমন পরিবেশ সৃষ্টি করব, নির্বাচন কমিশন এমন পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’
এ সময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সরকারে আছি কিন্তু এই সংলাপে এসেছি দল হিসেবে। নির্বাচনে কমিশনের ভাবমূর্তি আছে এবং অংশগ্রহণ সব নির্বাচনে ৬০ ভাগের বেশি, ৭০ শতাংশ। কাজেই পার্টিসিপেশন নেই এটা কে বলে? জনগণের অংশগ্রহণ আছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা আছে বলেই তারা ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীরাও অনেক নির্বাচনে জয়লাভ করছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা আছে।’