২০ জানুয়ারি ২০২০ আজকের মেঘনা ডটকম, ডেস্ক রিপোর্ট :
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও ইলেকট্টনিক মিডিয়ায় স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছে না বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সংবাদপত্র ও ইলেকট্টনিক মিডিয়া অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছে। ইতোমধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী আইন চূড়ান্তকরণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সোমবার (২০জানুয়াইর) জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি সংসদকে এই তথ্য জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সাংবাদিক বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের সাংবাদিকদের কল্যাণে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠন করেছেন। যার মাধ্যমে সরকার অসুস্থ, অস্বচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিকদের বিশেষ আর্থিক ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১৮৮টি পত্রিকায় ৮ম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়িত হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯ম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়নকারী পত্রিকাসমূহে সমান হারে বিজ্ঞাপন প্রদান করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে।
সরকারি দলের অপর সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী আরো জানান, বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক মানসম্পন্ন টেলিভিশন পরিচালনার জন্য আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে আধুনিক যান্ত্রপাতি ক্রয় ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ জানান, ‘জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য অনলাইন গণমাধ্যমের আবেদন জমা পড়েছে। সম্প্রচার ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত নীতিমালা ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যম রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন জমা দান ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৯৭টি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনপত্রসমূহ যাচাই-বাছাই করে তালিকাসহ তথ্য মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের মেয়াদে জাতীয় তথ্য বাতায়ন এবং ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু করে তথ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নেয়া হয়েছে। সরকার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। সরকারের সম্প্রচার নীতিমালার কারণে বর্তমানে বেসরকারি খতে ৪৪টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও এবং ৩৩টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ এছাড়া সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা ও সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে বিগত ছয় বছরে দেশের উপজেলা, স্থানীয় জেলা, প্রশাসনের সমন্বয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ২৫টি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় বলেও জানান মন্ত্রী।
রংপুর-১ আসনের এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আকাশ সংস্কৃতির বর্তমান যুগে বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের অবারিত সুযোগ রয়েছে। অপসংস্কৃতির আগ্রাসনরোধে রাষ্ট্রীয় তিনটি টিভি চ্যানেলসহ বেসরকারি প্রায় ৩০টির বেশি চ্যানেলে বাঙালি সংস্কৃতির নানা অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ও দেশীয় মূল্যবোধকে উপজীব্য করে নাটক, সঙ্গীতানুষ্ঠান, প্রামাণ্যচিত্র ইত্যাদি সম্প্রচারিত হচ্ছে। দেশের তরুণ সমাজকে দেশীয় সংস্কৃতিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তরুণদের উদ্দেশে নানাবিধ অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচার করা হচ্ছে।
তাছাড়া জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী বিদেশি অপসংস্কৃতির আগ্রাসনরোধ কল্পে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।