২৬ জানুয়ারি ২০২০, আজকের মেঘনা ডটকম, ডেস্ক রিপোর্ট :
সম্প্রতি গোটা বিশ্বের ঘুম কেড়ে নিয়েছে করোনা ভাইরাস। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে চীনের ৮০০-এরও বেশি লোক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। গত বছর এই অজানা ভাইরাস সেদেশে প্রথম দেখা গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
একেবারে শুরুতে মনে করা হয়েছিল, এই ভাইরাসটি সামুদ্রিক খাবার থেকে ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে সামুদ্রিক প্রাণি থেকে মানব দেহে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন বলছে, একজন মানুষের শরীর থেকেও এই ভাইরাস অন্য মানুষের শরীর ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি মারাত্মক এই ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
ভাইরাসের কারণে চীনের উহান শহরে জনজীবন থমকে গেছে৷ সেখানে ৪৫০ জন সামরিক চিকিৎসক পাঠানোর সংবাদ দিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া৷
তবে এরইমধ্যে উহান থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে অন্য শহরগুলোতে৷ সব মিলিয়ে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ১৮ টি শহরের সাড়ে পাঁচ কোটি বাসিন্দাকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ৷ সারা দেশে বিমানবন্দর, রেল ও বাস স্টেশনগুলোতে বসানো হচ্ছে স্ক্যানিং যন্ত্র৷
এ পর্যন্ত এক ডজনের বেশি দেশ তাদের নাগরিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুক্রবার নেপালে প্রথম একজন রোগীর সন্ধান মিলেছে৷
শনিবার অস্ট্রেলিয়া এই জীবাণু আক্রান্ত চারজনের খবর নিশ্চিত করেছে৷ ভিক্টোরিয়া রাজ্যে সেসব রোগীকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ সেখানে আরো রোগীর সন্ধান মিলতে পারে বলে শংকা তাদের৷
মালয়েশিয়া জানিয়েছে, উহান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা চীনের তিন আক্রান্ত রোগীকে তারা চিহ্নিত করেছে৷ তাদেরকে দেশটির সরকারি হাসপাতালের একটি আলাদা কক্ষে রাখা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১৩০০-এর বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা ভাইরাস কী?
করোনা ভাইরাস এমন এক ভাইরাল যা সাধারণ ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতোই প্রথমে আক্রমণ করে ফুসফুসে। মধ্য প্রাচ্য থেকে আসা এই ভাইরাস থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়। আস্তে আস্তে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।
যার থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
লক্ষ্মণ কী?
এর প্রাথমিক লক্ষ্ণণ অতি সাধারণ। ঠাণ্ডা লাগার মতোই সর্দি-কাশি, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, জ্বর হয় এই ভাইরাস সংক্রমণে।
কীভাবে ছড়ায়?
সহজেই একজনের থেকে আরেক জনের মধ্যে ছড়ায় এই ভাইরাস
– শারীরিক ঘনিষ্ঠতা এমনকি করমর্দন থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
– রোগী বা তার জিনিস ধরার পর ভালো করে হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ, চোখ, নাকে হাত দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে।
– হাঁচি-কাশি থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু বলছে, কিছু সাধারণ নিয়ম মানলেই এড়ানো যাবে এই সংক্রমণ-
রোগী কাছ থেকে আসার পর ভালো করে হাত ধুতে হবে। হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। ডিম, গোশত ভালো করে রান্না করুন। রোগীর থেকে দূরে থাকুন।
ওপরে বলা প্রাথমিক লক্ষ্মণের এক বা একাধিক দেখা দিলে অবহেলা করবেন না। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সূত্র: সিএনএন