৮ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মামলায় হাই কোর্টের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষে ফরিদপুরের জজ কোর্ট থেকে জামিন পেলেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) দুই হাজার টাকার মুচলেকায় ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ সেলিম মোল্লা এ আদেশ দেন।
নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করা অ্যাডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার এদনি জানান, রাষ্ট্রপক্ষ এ জামিনের আবেদনের বিরোধিতা না করায় আদালত দুই হাজার টাকার বেলবন্ডে নিক্সনকে নিয়মিত জামিন দেন।
ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মামলাটি করে নির্বাচন কমিশন। গত ১৫ অক্টোবর চরভদ্রাসন থানায় মামলাটি করেন চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নিক্সন চৌধুরী গত ৯ অক্টোবর সকালে মোবাইল থেকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে কল করেন। নির্বাচনে অধিকসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমপি। তিনি বলেন, বেশি সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কারণে তার প্রার্থী পরাজিত হলে মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। এ ছাড়া নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অশোভন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
এ ছাড়া ১০ অক্টোবর নির্বাচনের দিন চরভদ্রাসন উপজেলার চর অযোধ্যা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এক ব্যক্তি আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে আটক হন। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই ব্যক্তিকে আটকের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় নিক্সন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোবাইলে কল করে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এছাড়া নিক্সন নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী কাজে অংশ নিয়ে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এমপি সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে নির্বাচনী অচরণবিধি ভাঙেন বলে অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় গত ২০ অক্টোবর আট সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন পান এমপি নিক্সন। এরপর নিম্ন আদালতে এ জামিন হল।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর নির্বাচন পরিচালনায় অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় এ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনটি বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন।
ফরিদপুরের নির্বাচনী ইতিহাসে কোনো এমপির বিরুদ্ধে এটাই প্রথম আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছিল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জাতীয় সংসদ ২১৪ ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী আসনের সাংসদ মুজিবর রহমনা ওরফে নিক্সন চৌধুরী (৪২) গত ৯ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে তার মোবাইল ফোন থেকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে ফোন করে নির্বাচনে অধিক সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সেই ফোনালাপে এমপি নিক্সন তাকে অধিকসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কারণে তার সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হলে মহাসড়ক অবরোধ করাসহ নানা ভয়ভীতি দেখান এবং অশোভন মন্তব্য করেন।
এছাড়া নির্বাচনের দিন ১০ অক্টোচর চরভদ্রাসন উপজেলার চর অযোধ্যা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক ব্যক্তি নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় দায়িত্বে নিয়োজিত ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আইনানুগভাবে আটক করে।
এ ঘটনায় এমপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মোবাইল ফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘সুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের পক্ষে উচ্চারণ অনুপোযোগী অত্যন্ত অশালীন ভাষায় গালিগালাজসহ’ ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেন।
এছাড়া সাংসদ নিক্সন নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী কাজে অংশ নিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সাংসদ সমাবেশ ও মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে নির্বাচনী অচরণবিধি ভাঙেন বলে অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩ ও উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬ বিধি অনুযায়ী নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মামলার এজাহারে অনুরোধ জানানো হয়েছে।