১২ অক্টোবর ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা।।
চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে স্থানে চৌকি বসিয়ে বিএনপির গাড়ি বহরে তল্লাশি চালাচ্ছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় তাঁরা গাড়ি ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি ভাঙচুর ও হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা।
হামলায় অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী দাবি করেছেন।
আহতদের মধ্যে আছেন- বারইয়ারহাট পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. জসীম উদ্দিন (৫০), হিঙ্গুলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কাজী ছালেহ আহম্মদ (৫২), পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সেলিম হাজারী (৫০), বিএনপি নেতা জাফর আলম লিটন (৪০), জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নসুসহ সোনাগাজী, নোয়াখালী ও মিরসরাইয়ের নেতা-কর্মীরা। আহতদের উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা জানান, আজ বুধবার ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই অংশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়ে চট্টগ্রামমুখী গাড়িতে তল্লাশি চালানো শুরু করে।
বিএনপি নেতা শাহীদুল ইসলাম বলেন, বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, মিরসরাই, নিজামপুরসহ মিরসরাইয়ের বিভিন্ন স্পটে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির সমাবেশের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছেন। এ সময় অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
সরকারি দলের লোকজন ‘সমাবেশে গেলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের এলাকা ছাড়া করা হবে’ বলে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, যে যারা সমাবেশে যাবেন তাঁরা আগামী একবছর এলাকায় যেন না আসতে পারেন।
‘এই নির্দেশের পর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করে। এতে বারইয়ারহাটের ৪ জন নেতাসহ অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’
স্থানীয় বিএনপির নেতারা জানান, মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি দলের লোকজন মহড়া দিচ্ছেন। উপজেলার সমস্ত বাস, মাইক্রোবাস, হাইস মালিক ও চালকদের বিএনপির লোকজনকে গাড়ি ভাড়া না দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ, ঠাকুরদীঘি, মিরসরাই সদর, বড়তাকিয়া, কমলদহ, ডাকঘর, বড়দারোগাহাটে বিভিন্ন গাড়ি তল্লাশি চালিয়ে উত্তর দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
মিরসরাই বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, এ সময় ছয়টি বাস ভাঙচুর করা হয়। ফেরত পাঠানো হয় একাধিক বাস। হামলায় বিএনপির ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল কামাল মিটু বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেন কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আজভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছি। সমাবেশে যাওয়া কিছু গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উত্তর দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীও অস্বীকার করেন। পাল্টা তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিজের ‘গ্রুপিংয়ের কারণে’ হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।
বারইয়ারহাটে হামলার ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি জানিয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।