• সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৯ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগের ১২০ মন্ত্রী এমপি মনোনয়ন পাচ্ছেনা

রিপোর্টার : / ১১০ বার পঠিত
আপডেট টাইম : সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং, আজকের মেঘনা ডটকম, ডেস্ক রিপোর্ট :

এবার অনেক ডাকসাইটে, হোমরা-চোমরা নেতা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। রাজনৈতি অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে কারা মনোনয় পাচ্ছেন; কারা পাচ্ছেন না তা নিয়ে সরকার দলীয় হাই কমান্ড এখন থেকে ভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করছে। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ১২০ সংসদ সদস্য। এমন কি বাদ পড়ছেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীও।
সূত্র : পথরেখা ডটকম।

পাশাপাশি গত নির্বাচনে জোটভুক্ত দলগুলো যতগুলো আসন দেওয়া হয়েছিল; এবার তার চেয়ে বেশি আসন পাচ্ছে। নানা জল্পনার নির্বাচনী হাওয়ায় ছোট দলগুলোও এবার বড় দলের আচরণ করছে। কারণ ২০২৪ সালের নির্বাচন আগের মতো সহজ হবে না। চোখ থাকবে সারা বিশ্বের। বিএনপিও ‘ওয়াকভার’ দেবে না জানিয়ে দিয়েছে। ফলে সরকার ও জোটের কাছে যোগ্য প্রার্থীদের কদর এবার বাড়ছে।

কারা বাদ পড়ছেন; এ ব্যাপারে দলীয় সূত্র বলছে, তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় থাকায় দলের অনেক সংসদ সদস্যই দলীয় শৃঙ্খলার কথা ভুলে গেছেন। অনেকেই স্থানীয় পর্যায়ে দেখান দাম্ভিকতা। যারা দলকে মানছে না; যারা নেতাদের মূল্যায়ন করছেন না; অবৈধ টাকা সম্পদ গড়ে তুলেছেন তারা কাটা পড়ছেন। পাশাপাশি পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৪ দলীয় জোটকে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এবার নির্বাচন হবে অত্যন্ত কঠিন। বিগত সময়ে যেমন নির্বাচন হয়েছে, তার চেয়ে এবারের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তাই এবার দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে অনেক কিছু বিবেচনা করা হবে। অনেকের আমলনামা আমার কাছে এসেছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১২০ জনকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করছি। এদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এদের কারও কারও বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, অর্থনৈতিক অনিয়ম, মালিকানা জমি দখল, সরকারি সম্পত্তি দখল, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তাদের এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তাদের এবার কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এর মধ্যে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীও রয়েছেন। তাই কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে যারা যোগ্য তাদের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি চিন্তা করছি। গত ২ সেপ্টেম্বর গণভবনে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে এমনটাই প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন। গণভবনে রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে হবে। এবারের নির্বাচন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে। সামনে নানা ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ১৪ দলের বিকল্প নেই। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যার যার অবস্থান থেকে সরকারের উন্নয়ন প্রচার চালাতে হবে। জনগণের কাছে যেতে হবে। ১৪ দলের অনেকেই গত তিন দফায় ক্ষমতায় থাকলেও কিছু পাননি। এবার ১৪ দলের যারা যোগ্য তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। ১৪ দলের সঙ্গে আরও ৮টি দল যুক্ত হবে। তবে ১৪ দলের নাম ১৪ দলই থাকবে। তারাও নির্বাচনে অংশ নেবে। তাদের মধ্যেও কেউ কেউ মনোনয়ন পাবেন। আপনারা হতাশ হবেন না।

৬ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দফতর, উপ-দফতর, প্রচার, উপ-প্রচার সম্পাদকদের সঙ্গে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বৈঠকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে; এমন নেতাদের সবুজ সঙ্কেট দেওয়া হয়েছে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের যার যার নির্বাচনি এলাকায় গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে গুজব। ব্যবহার করা হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তাই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।

অনেক নেতার ওপর ওপর চরম ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাধিক সংস্থার জরিপে দলের সংসদ সদস্য-মন্ত্রীদের কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব সহকারে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। জরিপে মূলত সংসদ সদস্য-মন্ত্রীদের এলাকায় অবস্থান, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক, দলের ত্যাগী ও পোড় খাওয়া নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন করছেন কি না, নিজস্ব বলয় তৈরি করতে গিয়ে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টিতে কোনো ভূমিকা রয়েছে কি না, দলের জন্য ভূমিকা কী ছিল, দখল ও অনিয়মের মতো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না, দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত কি না এমন বিষয়গুলো তুলে আনা হয়েছে। ফলে নির্বাচনে মনোনয়ন এবার কিন্তু সহজ হবে না।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ বলেছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর দলীয় মনোনয়ন কাকে দেওয়া হবে বা হবে না, তা একান্তই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিক করবেন। এখানে কারও হাত নেই। তবে দলের মনোনয়ন বোর্ড রয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। আর ইতিমধ্যে নেত্রী মনোনয়নের গাউড লাইন কিন্তু জানিয়ে দিয়েছেন।

আসন্ন নির্বাচনের পাওয়ার হাউজের ওসব নেতাদের মনোানয়ন না দিতে সঙ্কট হতে পারে; এই বিষয়টিও যথাযথভাবে আমলে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মনোনয়ন না পেলেও যাতে তারা দলীয় কাজের সঙ্গে থাককেন; তা স্ফষ্ঠ করে বলে দিয়েছেন। এর ব্যত্যয় হলে ওসব নেতাদের বিপদ আরো বাড়তে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

পুরাতন সংবাদ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১