৪ ডিসেম্বর ২০২০, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
চীনের শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলমানদের ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম ঘোষিত শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করছে কর্তৃপক্ষ। দুই বছর আগে চীনা কর্তৃপক্ষের তথাকথিত কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র থেকে মুক্তির পর এক নারী এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুই বছর আগে সায়রাগুল সতবে শিনজিয়াংয়ের কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র থেকে মুক্তি পান। পেশায় চিকিৎসক এই নারী এখন সুইডেনে বাস করছেন। শিক্ষাকেন্দ্রে আটক থাকা অবস্থায় যে নির্যাতন, যৌন হয়রানি এবং জবরদস্তিমূলক বন্ধ্যাত্বকরণের শিকার হওয়ার ঘটনাগুলো তিনি তুলে ধরেছেন সম্প্রতি প্রকাশিত বইতে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সায়রাগুল বলেছেন, ‘প্রতি শুক্রবার আমাদেরকে শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো। মুসলমানদের জন্য পবিত্র দিন হওয়ায় তারা ইচ্ছা করে এই সময়টিকে বেছে নিয়েছিল। মাংস খেতে না চাইলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হতো।’
তিনি জানান, মুসলমান বন্দিদের মধ্যে লজ্জা ও অপরাধবোধ তৈরির জন্য তারা এই নীতি প্রণয়ন করেছিল। প্রত্যেকবার যখন মাংস খেতে বাধ্য করা হতো তখনকার ‘অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’
উইঘুর এই নারী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হতো আমি যেন ভিন্ন এক ব্যক্তি। আমার চারদিক অন্ধকার হয়ে যেতো। এটা মেনে নেওয়া সত্যিকারার্থে অনেক কঠিন ছিল।’
আল-জাজিরা জানিয়েছে, তাদের কাছে প্রান্ত তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, শিনজিয়াংয়ে শূকর পালন জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে শিনজিয়াংয়ের শীর্ষ প্রশাসক শোহরাত জাকির জানিয়েছিলেন, এই অঞ্চলটিকে শূকর উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। মূলত এই অঞ্চলের ৯০ শতাংশ বাসিন্দা উইঘুর মুসলিমদের অপদস্থ করতেই সরকারিভাবে এই কাজটি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
জার্মান নৃবিজ্ঞানী ও উইঘুর পন্ডিত আদ্রিয়ান জেঞ্জ জানিয়েছেন, চীনের সেক্যুলারিজম নীতির অংশ হিসেবে এই কাজটি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটি শিনজিয়াংয়ের বাসিন্দাদের সংস্কৃতি ও ধর্ম পুরোপুরি মুছে ফেলার প্রচেষ্টার অংশ এটি। এটি সেক্যুলারে রূপান্তর নীতির অংশ, যেখানে উইঘুরদের সেক্যুলারে রূপান্তর, কমিউনিস্ট পার্টির আদর্শ অনুসরণে বাধ্য করা হবে এবং অজ্ঞেয়বাদী বা নাস্তিক বানানো হবে।’