০৫ জুলাই ২০২১, আজকের মেঘনা. কম, ডেস্ক রিপোর্টঃ
প্রেমসংক্রান্ত বিষয়ে সালিশ করতে গিয়ে এক কিশোরীকে বিয়ে করার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার কনকদিয়া ইউপি সদস্য রফিক মীরের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মাদ ফারুক হোসেন ।
ওই আইনজীবী বলেন, ‘সম্প্রতি কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার একটি শালিসে গিয়ে বাল্যবিয়ে করেন, যেটি আইনত অবৈধ। একজন চেয়ারম্যান হিসেবে শাহীন হাওলাদার রক্ষক থেকে ভক্ষকের ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। তাই চেয়ারম্যানকে সাময়িক নয়, স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। যথাযথ জবাব না পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নোটিশটি ই-মেইল যোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ তিনজনকে পাঠানো হয়েছে।
গত ২১ জুনের নির্বাচনে শাহীন হাওলাদার বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২৮ জুন আলোচিত ওই ঘটনায় চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহীন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করেছেন। কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশও দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
জানা গেছে, প্রেম করে ওই কিশোরী এক কিশোরের সঙ্গে পালিয়ে যাবার কারণে সালিশে বসেন কিশোরীর বাবা। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান সালিশি হিসেবে যান। সেখানে গিয়ে কিশোরীকে পছন্দ হয়ে যায় ৬০ বছর বয়সী ওই চেয়ারম্যানের। পরে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে কিশোরীকে বিয়ে করেন তিনি।
সালিশে গিয়ে বয়স্ক চেয়ারম্যানের বিয়ের খবর গণমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে বিষয়টি আমলে নেন হাইকোর্ট। চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে কি না তা তদন্ত করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে ‘বাল্য বিবাহ’ ঘটেছে কি না তা তদন্ত করতে জেলা নিবন্ধককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর পুরো ঘটনায় ফৌজদারি অপরাধ ঘটেছে কি না তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করতে বলেছেন আদালত।
তবে ঘটনাটি দেশব্যাপী সমালোচনার জন্ম দিলে ওই কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটান চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। তবে এরপরও তাকে হারাতে হয় চেয়ারম্যান পদ। যদিও গণমাধ্যমে কাছে ওই চেয়ারম্যান দাবি করেছেন, বিয়ে করার ক্ষেত্রে তিনি প্রথম স্ত্রী এবং ওই কিশোরী এবং তার অভিভাবকদের অনুমতি নিয়েছিলেন।