৮ অক্টোবর ২০২২ইং আজকের মেঘনা ডটকম,
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
নিজেদের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবার বেইজিংকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিউ কুয়ো-চেং।
শুক্রবার রাজধানী তাইপেতে তাইওয়ানের আইনসভার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত দুই পার্লামেন্টারি কমিটির যৌথ বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে চীনের কোনো যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশে অনুপ্রবেশ করলে আমরা একে ‘যুদ্ধের প্রথম আঘাত’ বলে বিবেচনা করব এবং বেইজিংকে সমুচিত জবাব দেবো।’
গত ২০২১ সাল থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করেছে চীনা যুদ্ধবিমান। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটেছে চলতি বছর আগস্টে, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের সময়।
প্রত্যেকবারই অবশ্য চীনা যুদ্ধবিমানকে ধাওয়া করে নিজেদের আকাশসীমা ‘শত্রুমুক্ত’ রেখেছে তাইওয়ানের বিমানবাহিনী। সেই সঙ্গে চীনের প্রতি নিন্দাও জানিয়েছে স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপভূখণ্ডের সরকার।
‘তবে এবারের পরিস্থিতি অন্যান্যবারের চেয়ে আলাদা। বিশ্বস্তসূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, এখন থেকে নিয়মিত তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করবে চীনের বিমানবাহিনী এবং এক্ষেত্রে মানবচালিত বিমানের পরিবর্তে তারা ব্যবহার করবে ড্রোন,’ শুক্রবারের বৈঠকে বলেন চিউ কুয়ো-চেং।
‘এ কারণে আমাদের নীতিতেও পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।’
ঠিক কীভাবে চীনকে জবাব দেওয়া হবে— তা অবশ্য ভেঙে বলেননি তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তবে শুক্রবারের বৈঠকে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীর মতো তাইওয়ানের সেনাবাহিনীও রেডলাইন মেনে চলে। চীনা সেনারা যদি রেডলাইন অতিক্রম করে, তাহলে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের মতো করে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।’
আগস্টে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর তাইওয়ান প্রনালীতে টানা সামরিক মহড়া করে চীন। তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের যে কৌশলগত চুক্তি চিল তা এই মহড়ার মধ্যে দিয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও উল্লেক করেন চিউ কুয়ো-চ্যাং।
১৯৪০ সালের গৃহযুদ্ধে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় তাইওয়ান। তারপর থেকে তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী রাজনীতিকরা নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বলে দাবি করলেও চীন এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে এখনও নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। তাইওয়ান প্রসঙ্গে সবসময় ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলে চীন।
৩৬ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপ ভূখণ্ডের রয়েছে নিজস্ব সংবিধান, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্ব এবং প্রায় ৩ লাখ সক্রিয় সেনা সদস্যের একটি সেনাবাহিনী।
তবে এখন পর্যন্ত খুবই অল্প কয়েকটি দেশ তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকলেও তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত নিজেদের কোনো দূতাবাস খোলেনি দেশটি।
তবে তাইওয়ান বিষয়ক একটি আইনের আওতায় এই স্বাধীনতাকামী দ্বীপভূখণ্ডকে গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকেই সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
এমন এক সময়ে এই সতর্কবার্তা দিল তাইওয়ান, যখন ন্যান্সি পেলোসির সফরের জেরে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির কাজ শুরু করেছে চীন।
সূত্র: আরটি
এসএমডব্লিউ