আনিসুর রহমানঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাড়ি মজলিস গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটে গেলো চাঞ্চল্যকর হত্যা কান্ড। বিবাহ বিচ্ছেদের তিন মাস পর আঁখি (২৬) নামের ১ কন্যা সন্তানের মাকে গলা ও হাত পায়ের রগ কেটে সুপরিকল্পিত পন্থায় মর্মান্তিক ভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠে তার সাবেক স্বামী রুবেলের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে মোসলেম মিয়ার ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সোনারগাঁ থানা পুলিশের একটি দল ও ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিকেলে আঁখির মরাদেহ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। সাবেক স্বামী রুবেল মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাইকারটেক মুগারচর এলাকার মফিজুলের সন্তান। তদন্তের স্বার্থে উদ্ধারকৃত আলামত পুলিশ প্রকাশ করেনি।
রুবেলের পূর্ব পরিচিত নিপা আক্তার জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় রুবেল তার সাবেক স্ত্রী আঁখিকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসে। তারা জানান, দুজনের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি আছে তা কথা বলে মিমাংসা করবেন। সে জন্য তাদের আমার ঘরে বসতে দিতে হবে। আমি পূর্ব পরিচিত বিধায় তাদের ঘরে বসতে দিয়ে আমি বাড়ির ছাদে গিয়ে সময় কাটাতে থাকি। ছাদ থেকে ফিরে কক্ষে প্রবেশ করার সময় আমি কিছু বোঝার আগেই রুবেল আমাকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে রুমে গিয়ে দেখি তার স্ত্রী আঁখির গলাকাটা লাশ বিছানায় পড়ে আছে।
এ ঘটনায় আমি সম্পূর্ণ হতভাগ হয়ে পরি। পরে চৌরাস্তা-হাবিবপুর বাজারে গিয়ে রুবেলের বাবা মফিজুলকে বিষয়টি জানাই। পরে দু’জনই থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। নিপা
আরও জানান, একই এলাকার হাবিবপুর ভাড়া থাকার সময় রুবেলদের সাথে তাদের পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে আজ সকালে সে আমার বাড়িতে আসে তার স্ত্রী সাথে কথা বলবে বলে।
পুলিশ টীম জানায়, রুবেলের সাথে গত ৬ বছর আগে বিয়ে হয় বন্দর উপজেলার বাদুরী এলাকা নজরুল ইসলামের মেয়ে আঁখির সাথে। তাদের দাম্পত্য জীবনে হুমাইরা নামের ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ৩ মাস আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
মঙ্গলবার সকালে তাকে একটি বাসায় ডেকে নিয়ে এসে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে সে পালিয়ে যায়। পুলিশ আরো জানায়, হত্যার নমুনা দেখে ধারনা করা হচ্ছে আঁখিকে ডেকে এনে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সোনারগাঁও থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বাড়ি মজলিশ এলাকা থেকে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল মর্গে প্রেরণ করা হয়। মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ হত্যা কান্ডের সাথে যে বা যারা জরিত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশের পক্ষ হতে কোনো কমতি থাকবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) মো. খোরশেদ আলম জানান, নিহত আঁখি ও তার সাবেক স্বামী রুবেল সকাল ১০ টার দিকে এ বাসায় আসে তাদের পূর্ব পরিচিত নিপা অন্যকাজে ব্যস্ত থাকায় এক পর্যায়ে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে রুবেল পালিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের মূল কারণ জানার জন্য বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।