আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে ১৪৪ জনের মৃত্যুদণ্ডের ডেথ রেফারেন্সের শুনানি আটকে আছে হাইকোর্টে। আর এই মামলার শুনানি ও মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় দ্রুত কার্যকরে শিগগিরই হাইকোর্টে পৃথক বেঞ্চ গঠন হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির অনুমতি পেলেই চলতি মাসেই শুরু হবে বেঞ্চের কার্যক্রম।
রাজধানীর ওয়ারীতে ৭ বছরের শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে ধর্ষক হারুন উর রশিদকে গেল ৯ মার্চ মৃত্যুদণ্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১। অভিযোগ গঠনের মাত্র ৬৬ দিনের মাথায় বিচারিক আদালতে মামলার রায় ঘোষণা হলেও, ৮ মাসেও হাইকোর্টে শুরু হয়নি ডেথ রেফারেন্স শুনানি। এতে সাজা কার্যকর করা যাচ্ছে না শিশু সায়মার ধর্ষক ও হত্যাকারীর।
এছাড়া, ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়াদের মধ্যে মাত্র ৫ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা গেছে। এ অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ১৪৪ আসামি আছেন কনডেম সেলে, যাদের সাজা কার্যকর করা হচ্ছে না উচ্চ ডেথ রেফারেন্স শুনানি সম্পন্ন না হওয়ায়।
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হলে সঙ্গে সঙ্গে এটা কার্যকর করা যায় না। কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে তা শেষ হলে কার্যকর করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ধর্ষণ মামলায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় দ্রুত কার্যকরে শিগগিরই হাইকোর্টে পৃথক বেঞ্চ গঠন হচ্ছে। এই বেঞ্চের কার্যক্রম শুরু হলে দ্রুতই ধর্ষণ মামলার ডেথ রেফারেঞ্চ মামলার শুনানি শেষ হবে। এছাড়া, যারা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তাদের পে মামলা করতে একটু দেরি হয়। এরকম আরো অনেক কারণেই দেরি হয়।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের সাজা দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা নিশ্চয়ই চেষ্টা করব যে এই অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
প্রসঙ্গত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে সারাদেশে ৯৫টি ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে এসব ট্রাইব্যুনালের মামলায় সাজার হার মাত্র ৩ শতাংশ। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে বর্তমানে মোট ডেথ রেফারেন্সের ১ হাজার ৮২৭টি মামলা বিচারাধীন